প্রশ্নঃ পৃথিবীর কয়টি গতি রয়েছে ও কী কী ধরনের?
উত্তরঃ পৃথিবীর দুটি গতি রয়েছে—একটি হল আবর্তন গতি এবং অন্যটি হল পরিক্রমণ গতি।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর আবর্তন গতি কাকে বলে?
উত্তরঃ পৃথিবী তার কক্ষপথের সঙ্গে 66½° কোণে হেলানো অবস্থায় নিজের অক্ষরেখার চারদিকে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরে একবার আবর্তন করতে প্রায় ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড সময় নেয়। এই গতিকে পৃথিবীর আবর্তন গতি বা আহ্নিক গতি বলে।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর আবর্তন গতির দিক কী?
উত্তরঃ পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে নিজের অক্ষরেখার চারপাশে ঘোরে।
প্রশ্নঃ সূর্যের আপাত গতি কী বোঝায়?
উত্তরঃ পৃথিবী নিজে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘোরে বলে আমরা সূর্যকে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে যেতে দেখি। এই দৃশ্যমান গতিকেই সূর্যের আপাত দৈনিক গতি বলা হয়।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর আবর্তন গতির পক্ষে কী কী প্রমাণ পাওয়া যায়?
উত্তরঃ পৃথিবীর আবর্তনের পক্ষে প্রমাণগুলি হল:
i. দিন ও রাত্রির পর্যায়ক্রম,
ii. মহাকর্ষ সূত্র অনুযায়ী বস্তুর আচরণ,
iii. স্থির বায়ুতে উঁচু থেকে প্রস্তর ফেলার পরীক্ষা,
iv. ফুকোর দোলকের পরীক্ষা,
v. পৃথিবীর অভিগত গোলকাকৃতি রূপ।
প্রশ্নঃ দিন ও রাত্রি কীভাবে সংঘটিত হয়?
উত্তরঃ পৃথিবী ঘুরতে থাকার ফলে কোনো অংশ সূর্যের দিকে এলে সেখানে সূর্যোদয়ের মাধ্যমে দিন হয় এবং যখন সেই অংশ সূর্য থেকে দূরে চলে যায়, তখন সূর্যাস্তের মাধ্যমে রাত্রি হয়।
প্রশ্নঃ সৌরদিন কাকে বলে?
উত্তরঃ পৃথিবী যখন সূর্যের সাপেক্ষে একবার পূর্ণ আবর্তন সম্পন্ন করে এবং একই দ্রাঘিমায় পরপর দুটি মধ্যাহ্ন ঘটে, তখন সময়ের ব্যবধান হয় প্রায় ২৪ ঘণ্টা। একে সৌরদিন বলে।
প্রশ্নঃ নাক্ষত্রদিন বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ সূর্য ছাড়া মহাকাশের কোনো নির্দিষ্ট নক্ষত্রের সাপেক্ষে পৃথিবী একবার আবর্তন সম্পন্ন করতে যে সময় লাগে—২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড—তাকে নাক্ষত্রদিন বলে।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর অক্ষ কাকে বলা হয়?
উত্তরঃ পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরুকে যুক্তকারী কাল্পনিক রেখাকে পৃথিবীর অক্ষ বলা হয়।
প্রশ্নঃ পৃথিবী ৬৬½° কোণে হেলে থাকার কারণ কী?
উত্তরঃ মঙ্গল গ্রহের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে পৃথিবী তার কক্ষতলের সঙ্গে ৬৬½° কোণে হেলে গেছে।
প্রশ্নঃ মহাকাশে কোন্ দুটি গ্রহ ঘড়ির কাটার দিকে আবর্তন করে?
উত্তরঃ শুক্র এবং ইউরেনাস গ্রহ ঘড়ির কাটার মতো অর্থাৎ পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে আবর্তন করে।
প্রশ্নঃ প্রথম কোন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী বলেন যে পৃথিবী গতিশীল?
উত্তরঃ প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী আর্যভট্ট প্রথম বলেন যে পৃথিবী স্থির নয়, বরং নিজ অক্ষে আবর্তিত হয়।
প্রশ্নঃ নিরক্ষরেখার ব্যাসার্ধের মান কত?
উত্তরঃ নিরক্ষরেখার ব্যাসার্ধের মান প্রায় ৬,৩৭৮ কিলোমিটার।
প্রশ্নঃ নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর আবর্তনের বেগ কত?
উত্তরঃ নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর আবর্তনের গতি প্রায় ১,৬৭৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
প্রশ্নঃ পৃথিবী আবর্তন করলেও আমরা কেন তা অনুভব করি না?
উত্তরঃ আমরা পৃথিবীর আবর্তন অনুভব করি না, কারণ আমরা ও আমাদের চারপাশের সমস্ত কিছু একসঙ্গেই পৃথিবীর সঙ্গে একই গতিতে ঘুরছে। তাই আপেক্ষিকভাবে কোনো স্থান পরিবর্তন চোখে পড়ে না।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্টি হওয়া বলকে কী বলে?
উত্তরঃ পৃথিবীর আবর্তনের ফলে একটি কেন্দ্রবহির্মুখী বল সৃষ্টি হয়, যা নিরক্ষীয় অঞ্চলকে স্ফীত ও মেরু অঞ্চলকে চ্যাপ্টা করে তোলে।
প্রশ্নঃ কেন্দ্রবহির্মুখী বল কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো বস্তু বৃত্তাকার পথে ঘোরার সময় কেন্দ্র থেকে দূরের দিকে যে বল কাজ করে, তাকে কেন্দ্রবহির্মুখী বল বলে।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চল স্ফীত ও মেরু অঞ্চল চ্যাপ্টা হওয়ার কারণ কী?
উত্তরঃ পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্ট কেন্দ্রবহির্মুখী বলের কারণে নিরক্ষীয় অঞ্চল স্ফীত এবং মেরু অঞ্চল চাপা হয়ে গেছে।
প্রশ্নঃ কোরিওলিস বল কী এবং এটি কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তরঃ ১৮৩৫ সালে ফরাসি গণিতজ্ঞ জি. ডি. কোরিওলিস প্রমাণ করেন যে, পৃথিবীর আবর্তনের ফলে একটি বাহ্যিক বল উৎপন্ন হয়, যা গতিশীল পদার্থের গতি বেঁকে দেয়। এই বলকেই কোরিওলিস বল বলা হয়।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর কোন অঞ্চলে কোরিওলিস বলের প্রভাব সবচেয়ে বেশি এবং কোথায় কম?
উত্তরঃ কোরিওলিস বলের প্রভাব নিরক্ষীয় অঞ্চলে সবচেয়ে কম এবং মেরু অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি হয়।
প্রশ্নঃ ফেরেলের সূত্র কী বলে?
উত্তরঃ ১৮৫৯ সালে উইলিয়াম ফেরেল বলেন, পৃথিবীর আবর্তনের কারণে কোরিওলিস বল সৃষ্টি হয়, যার ফলে নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে বায়ু ও স্রোত সরল পথে না গিয়ে উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে যায়।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর আবর্তন গতির প্রধান প্রধান ফলাফল কী কী?
উত্তরঃ পৃথিবীর আবর্তনের ফলে যে ফলাফলগুলি ঘটে তা হল–
i. দিন ও রাত্রির পরিবর্তন,
ii. সময়ের পার্থক্য সৃষ্টি,
iii. পৃথিবীর অভিগত গোলীয় রূপ,
iv. কোরিওলিস বলের সৃষ্টি,
v. জীবজগতের বৈচিত্র্য সৃষ্টি।
প্রশ্নঃ ছায়াবৃত্ত কাকে বলা হয়?
উত্তরঃ পৃথিবীর আলোকিত ও অন্ধকার অংশের মধ্যে যে বৃত্তাকার সীমারেখা গঠিত হয়, তাকে ছায়াবৃত্ত বলে।
প্রশ্নঃ প্রভাত বা সকাল কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তরঃ পৃথিবী আবর্তনের ফলে কোনো স্থানের ছায়াবৃত্ত পার করে আলোকিত অংশে প্রবেশ করার সময়কালকে প্রভাত বা সকাল বলা হয়।
প্রশ্নঃ সন্ধ্যা কাকে বলে?
উত্তরঃ পৃথিবীর কোনো স্থানের আলোকিত অংশ থেকে ছায়াবৃত্ত পার করে অন্ধকারে প্রবেশ করার সময়টিকে সন্ধ্যা বলা হয়।
প্রশ্নঃ ঊষা কী?
উত্তরঃ সূর্যোদয়ের আগে আকাশে যে হালকা আলো দেখা যায়, তাকে ঊষা বলা হয়। এটি সূর্যরশ্মির প্রতিসরণ ও বায়ুমণ্ডলের ধূলিকণার প্রতিফলনের ফলে ঘটে।
প্রশ্নঃ গোধূলি কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তরঃ সূর্যাস্তের পর, সূর্যের আলো ধূলিকণার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়ে পশ্চিম আকাশে আলো তৈরি করে। এই সময়কালকে গোধূলি বলা হয়।
প্রশ্নঃ ঊষা ও গোধূলির স্থায়িত্বকাল কোথায় সবচেয়ে বেশি ও কোথায় সবচেয়ে কম হয়?
উত্তরঃ ঊষা ও গোধূলির স্থায়িত্ব মেরু অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি এবং নিরক্ষরেখায় সবচেয়ে কম।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর আবর্তনের বেগ কোথায় সবচেয়ে বেশি এবং কোথায় সবচেয়ে কম হয়?
উত্তরঃ পৃথিবীর আবর্তনের বেগ নিরক্ষরেখায় সবচেয়ে বেশি এবং মেরু অঞ্চলে সবচেয়ে কম।
প্রশ্নঃ আকাশ দিনের বেলায় নীল দেখায় কেন?
উত্তরঃ বায়ুমণ্ডলে সূর্যরশ্মি ছড়িয়ে পড়ার সময় নীল রঙের বিচ্ছুরণ সবচেয়ে বেশি হয়, তাই দিনের বেলা আকাশ নীল দেখায়।
প্রশ্নঃ পরিক্রমণ গতি কাকে বলে?
উত্তরঃ পৃথিবী তার নিজের অক্ষে আবর্তনের পাশাপাশি একটি নির্দিষ্ট উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যের চারদিকে নির্দিষ্ট সময়ে এবং নির্দিষ্ট দিকে ঘুরে চলে। এই গতিকেই পরিক্রমণ গতি বা বার্ষিক গতি বলা হয়।
প্রশ্নঃ পৃথিবী সূর্যের চারদিকে একবার পরিক্রমণ করতে কত সময় নেয়?
উত্তরঃ পৃথিবী সূর্যের চারপাশে একবার পরিক্রমণ সম্পূর্ণ করতে সময় নেয় ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড। তবে সাধারণভাবে এক বছরকে ৩৬৫ দিন ধরা হয়।
প্রশ্নঃ অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার কী?
উত্তরঃ সূর্যকে পরিক্রমণ করতে পৃথিবীর ৩৬৫ দিন ছাড়াও অতিরিক্ত ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড সময় লাগে। এই অতিরিক্ত সময় প্রতি চার বছর পর একদিন করে যুক্ত হয়ে যায়, ফলে ফেব্রুয়ারি মাসে ২৯ দিন হয় এবং পুরো বছরটি ৩৬৬ দিনে পরিণত হয়। একে অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার বলা হয়।
প্রশ্নঃ কোন কোন বছরকে অধিবর্ষ ধরা হয় এবং কেন?
উত্তরঃ যে বছরগুলি ৪ দিয়ে বিভাজ্য এবং শতাব্দী বছরগুলির মধ্যে যেগুলি ৪০০ দিয়ে বিভাজ্য, সেই বছরগুলিকে অধিবর্ষ ধরা হয়। যেমন – ২০০০, ২০০৪, ২০০৮, ২০১২ ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির পক্ষে কী কী প্রমাণ পাওয়া যায়?
উত্তরঃ পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির স্বপক্ষে প্রাপ্ত প্রমাণগুলি হল –
i. অন্যান্য গ্রহের গতিপথ পর্যবেক্ষণ,
ii. কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে সংগৃহীত তথ্য,
iii. নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র এবং
iv. নক্ষত্রের আপাত স্থানান্তর।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর কক্ষপথ কাকে বলে?
উত্তরঃ পৃথিবী সূর্যের চারপাশে যে নির্দিষ্ট পথে নিয়মিত পরিক্রমণ করে, তাকে পৃথিবীর কক্ষপথ বলা হয়।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর কক্ষপথের আকৃতি কেমন?
উত্তরঃ পৃথিবীর কক্ষপথ একটি উপবৃত্তাকার বা এলিপটিক্যাল আকৃতির।
প্রশ্নঃ অপসূর অবস্থান বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ প্রতি বছর ৪ জুলাই পৃথিবী যখন সূর্য থেকে প্রায় ১৫ কোটি ২০ লক্ষ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে, তখন তাকে অপসূর অবস্থান বলা হয়।
প্রশ্নঃ অনুসূর অবস্থান বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ প্রতি বছর ৩ জানুয়ারি পৃথিবী যখন সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি অর্থাৎ প্রায় ১৪ কোটি ৭০ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করে, তখন সেই অবস্থানকে অনুসূর বলা হয়।
প্রশ্নঃ সূর্যের উত্তরায়ণ এবং দক্ষিণায়ন কী বোঝায়?
উত্তরঃ ২১ মার্চ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সূর্যের উত্তরমুখী আপাত গতি উত্তরায়ণ নামে পরিচিত এবং ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত সূর্যের দক্ষিণমুখী আপাত গতি দক্ষিণায়ন নামে পরিচিত।
প্রশ্নঃ শীতকালে সূর্যকে তুলনামূলক বড়ো দেখায় কেন?
উত্তরঃ শীতকালে (উত্তর গোলার্ধে) পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকে, যাকে অনুসূর বলা হয়। তাই শীতকালে সূর্যকে তুলনামূলক বড়ো দেখা যায়।
প্রশ্নঃ সুমেরু ও কুমেরু অঞ্চলে একটানা ছয় মাস দিন ও ছয় মাস রাত কেন থাকে?
উত্তরঃ পৃথিবী তার কক্ষতলের সঙ্গে ৬৬½° কোণে হেলানো থাকার ফলে সূর্যরশ্মির পতন কোণে পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে এক সময়ে সুমেরুতে ছয় মাস দিন ও কুমেরুতে ছয় মাস রাত এবং অন্য সময়ে তার উল্টো ঘটে।
প্রশ্নঃ বিজ্ঞানীরা ডিসেম্বর মাসে অ্যান্টার্কটিকা অভিযানে যান কেন?
উত্তরঃ ডিসেম্বর মাসে সূর্যের দক্ষিণায়ন চলার কারণে দক্ষিণ গোলার্ধে দিন বড়ো ও রাত ছোটো হয়। এতে দিনের আলো দীর্ঘ সময় থাকে, বরফ গলে যায়, শীত কম থাকে এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়।
প্রশ্নঃ ‘নিশীথ সূর্যের দেশ’ কাকে বলা হয়?
উত্তরঃ নরওয়ের উত্তর সীমানায় হ্যামারফেস্ট বন্দরের নিকটবর্তী অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে মধ্যরাতেও সূর্য দেখা যায়। তাই এই অঞ্চলকে ‘নিশীথ সূর্যের দেশ’ বলা হয়।
প্রশ্নঃ ঋতুবৈচিত্র্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ পৃথিবীর আবর্তন ও পরিক্রমণ গতির ফলে সৌরবিকিরণের তীব্রতা ও স্থায়িত্বে পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে সময়ভিত্তিক তাপমাত্রার পার্থক্যে যে উষ্ণ বা শীতল পরিবেশ তৈরি হয়, তাকে ঋতু বলা হয়। আর ঋতুর এই ধারাবাহিক পরিবর্তনকে ঋতুবৈচিত্র্য বলে।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর কোন কোন স্থানে ঋতু পরিবর্তন হয় না?
উত্তরঃ নিরক্ষীয় অঞ্চল এবং মেরু অঞ্চলে ঋতু পরিবর্তনের কোনও প্রকট প্রভাব দেখা যায় না।
প্রশ্নঃ ‘বিষুব’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তরঃ ‘বিষুব’ শব্দের অর্থ হচ্ছে “সমান”, অর্থাৎ যেদিন দিন ও রাত সমান দৈর্ঘ্যের হয়।
প্রশ্নঃ মহাবিষুব বা বসন্ত বিষুব কাকে বলে?
উত্তরঃ ২১ মার্চ তারিখে পৃথিবী তার কক্ষপথে এমন এক অবস্থানে থাকে, যখন সূর্যের কিরণ নিরক্ষরেখার উপর ঠিক লম্বভাবে পড়ে এবং দিন-রাত্রি সমান হয়। এই দিনটিকে মহাবিষুব বা বসন্ত বিষুব বলে।
প্রশ্নঃ জলবিষুব বা শারদ বিষুব কাকে বলে?
উত্তরঃ ২৩ সেপ্টেম্বর তারিখে পৃথিবী এমনভাবে সূর্যের মুখোমুখি অবস্থান করে যে, সূর্যরশ্মি নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে পড়ে এবং দিন ও রাত সমান হয়। এই দিনটিকে জলবিষুব বা শারদ বিষুব বলা হয়।
প্রশ্নঃ কর্কটসংক্রান্তি বা গ্রীষ্ম সংক্রান্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ ২১ জুন তারিখে সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। এই ঘটনাকে কর্কটসংক্রান্তি বলা হয়।
প্রশ্নঃ উত্তর অয়নান্ত দিবস কাকে বলে?
উত্তরঃ ২১ জুন কর্কটসংক্রান্তির দিনে সূর্যের উত্তরমুখী আপাত গতি শেষ হয়। এই দিনটিকে উত্তর অয়নান্ত দিবস বলা হয়।
প্রশ্নঃ মকরসংক্রান্তি বা শীত সংক্রান্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ ২২ ডিসেম্বর তারিখে সূর্য মকরক্রান্তি রেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। এই দিনটিকে মকরসংক্রান্তি বলা হয়।
প্রশ্নঃ দক্ষিণ অয়নান্ত দিবস কাকে বলে?
উত্তরঃ ২২ ডিসেম্বর মকরসংক্রান্তির দিনে সূর্যের দক্ষিণমুখী আপাত গতি শেষ হয়। এই দিনটিকে দক্ষিণ অয়নান্ত দিবস বলা হয়।
প্রশ্নঃ দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে বড়োদিন উৎসব পালন করা হয় কেন?
উত্তরঃ ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলে থাকে, ফলে সেখানে দিন বড়ো এবং তাপমাত্রা বেশি থাকে। তাই ২৫ ডিসেম্বর, যখন উত্তর গোলার্ধে শীতকাল, দক্ষিণ গোলার্ধে তখন গ্রীষ্মকাল হওয়ায় বড়োদিন উৎসব গ্রীষ্মকালেই পালিত হয়।